ঢাকা ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনা সিটিতে আশা-আশঙ্কায় ভোট শুরু

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮ ১৩ বার পড়া হয়েছে

আমি ২০১৩ সালে ভোটার হয়েছি। কিন্তু ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে যাইনি একতরফা নির্বাচনের কারণে। সে হিসাবে এবার আমার জন্য প্রথম ভোট। আমি ভোট দিতে চাই। কিন্তু কেন্দ্রে যাব পরিস্থিতি জেনে-বুঝে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যেসব নির্বাচন হয়েছে, তার অবস্থা দেখে আস্থা পাচ্ছি না। পাশাপাশি এখানকার পরিবেশও আমাকে আশাবাদী করতে পারছে না।’ খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এমন মন্তব্য করেন খুলনা বিএল কলেজের শিক্ষার্থী আল আমিন।

একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র রেজাউল করিমের মতে, ভোট ভালোই হবে। এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থীর অবস্থাই ভালো। দুই দলই শক্তিশালী। এ কারণে মানুষের মধ্যে হয়তো শঙ্কা কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ভোট সুষ্ঠু হবে। ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন না—এমন কোনো পরিস্থিতি এখানে হবে না।’

খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোট নিয়ে আল আমিনদের মতো অনেকের মধ্যে শঙ্কা আছে। আবার রেজাউলদের মতো অনেকেই ভালো ভোটের আশা করছেন। তবে দলভেদে রাজনৈতিক কর্মীদের অবস্থা ভিন্ন। সরকারি দলের কর্মীরা অনেক আশাবাদী। আর বিএনপির কর্মীরা আশঙ্কায়।

আর আর এফ সেকেন্ডারি স্কুল ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। ফুলবাড়ী গেট, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: সাদ্দাম হোসেনএমন আশা ও আশঙ্কার মধ্যেই আজ সকাল আটটা থেকে খুলনা সিটি করপোরেশনে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। কোনো বিরতি ছাড়াই বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এরপর ফল ঘোষণা। জানা যাবে—কে বিজয়ী হয়ে খুলনার নগরপিতা হচ্ছেন।

নির্বাচনে মেয়র পদে এবার পাঁচজন প্রার্থী। আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক নৌকা এবং বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুজ্জাম্মিল হক হাতপাখা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মিজানুর রহমান বাবু কাস্তে এবং জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুর রহমান লাঙল প্রতীকে মেয়র পদে লড়ছেন।

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৮ জন। ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৩৫ জন।

কেডিএ খান জাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন এক ভোটার। ফুলবাড়ী গেট, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: সাদ্দাম হোসেন

এবারের নির্বাচনে ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি। দুটি ওয়ার্ডের দুটি ভোটকেন্দ্রে ভোট হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সেখানে মেয়র প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক এবং সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীকে বোতাম চেপে ইভিএমে ভোট দেবেন ভোটাররা।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো ইউনুচ আলী প্রথম আলোকে বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করার জন্য তাঁদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন ২৪ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য। সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে এই সংখ্যা ২২ জন করে। এর বাইরে পুলিশের ১১টি স্ট্রাইকিং দল (প্রতিটিতে ১০ জন করে), ৭০টি ভ্রাম্যমাণ দল (প্রতিটিতে ৭ জন করে), ১৬ প্লাটুন বিজিবি, র‍্যাবের ৩২টি ভ্রাম্যমাণ দল, ৩১ জন নির্বাহী হাকিম ও ১০ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করছেন।

কেডিএ খান জাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে। ফুলবাড়ী গেট, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: সাদ্দাম হোসেননির্বাচন কমিশন বলছে, খুলনায় মোট ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৩৪টিই ঝুঁকিপূর্ণ (কমিশনের ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ)। আর ৫৫টি সাধারণ বা ঝুঁকিমুক্ত কেন্দ্র আছে।

খুলনায় ২০১৩ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে আবদুল খালেদ তালুকদার পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে খালেক মেয়র নির্বাচিত হন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

খুলনা সিটিতে আশা-আশঙ্কায় ভোট শুরু

আপডেট সময় : ০৫:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮

আমি ২০১৩ সালে ভোটার হয়েছি। কিন্তু ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে যাইনি একতরফা নির্বাচনের কারণে। সে হিসাবে এবার আমার জন্য প্রথম ভোট। আমি ভোট দিতে চাই। কিন্তু কেন্দ্রে যাব পরিস্থিতি জেনে-বুঝে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যেসব নির্বাচন হয়েছে, তার অবস্থা দেখে আস্থা পাচ্ছি না। পাশাপাশি এখানকার পরিবেশও আমাকে আশাবাদী করতে পারছে না।’ খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এমন মন্তব্য করেন খুলনা বিএল কলেজের শিক্ষার্থী আল আমিন।

একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র রেজাউল করিমের মতে, ভোট ভালোই হবে। এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থীর অবস্থাই ভালো। দুই দলই শক্তিশালী। এ কারণে মানুষের মধ্যে হয়তো শঙ্কা কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ভোট সুষ্ঠু হবে। ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন না—এমন কোনো পরিস্থিতি এখানে হবে না।’

খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোট নিয়ে আল আমিনদের মতো অনেকের মধ্যে শঙ্কা আছে। আবার রেজাউলদের মতো অনেকেই ভালো ভোটের আশা করছেন। তবে দলভেদে রাজনৈতিক কর্মীদের অবস্থা ভিন্ন। সরকারি দলের কর্মীরা অনেক আশাবাদী। আর বিএনপির কর্মীরা আশঙ্কায়।

আর আর এফ সেকেন্ডারি স্কুল ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। ফুলবাড়ী গেট, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: সাদ্দাম হোসেনএমন আশা ও আশঙ্কার মধ্যেই আজ সকাল আটটা থেকে খুলনা সিটি করপোরেশনে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। কোনো বিরতি ছাড়াই বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এরপর ফল ঘোষণা। জানা যাবে—কে বিজয়ী হয়ে খুলনার নগরপিতা হচ্ছেন।

নির্বাচনে মেয়র পদে এবার পাঁচজন প্রার্থী। আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক নৌকা এবং বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুজ্জাম্মিল হক হাতপাখা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মিজানুর রহমান বাবু কাস্তে এবং জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুর রহমান লাঙল প্রতীকে মেয়র পদে লড়ছেন।

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৮ জন। ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৩৫ জন।

কেডিএ খান জাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন এক ভোটার। ফুলবাড়ী গেট, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: সাদ্দাম হোসেন

এবারের নির্বাচনে ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি। দুটি ওয়ার্ডের দুটি ভোটকেন্দ্রে ভোট হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সেখানে মেয়র প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক এবং সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীকে বোতাম চেপে ইভিএমে ভোট দেবেন ভোটাররা।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো ইউনুচ আলী প্রথম আলোকে বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করার জন্য তাঁদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন ২৪ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য। সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে এই সংখ্যা ২২ জন করে। এর বাইরে পুলিশের ১১টি স্ট্রাইকিং দল (প্রতিটিতে ১০ জন করে), ৭০টি ভ্রাম্যমাণ দল (প্রতিটিতে ৭ জন করে), ১৬ প্লাটুন বিজিবি, র‍্যাবের ৩২টি ভ্রাম্যমাণ দল, ৩১ জন নির্বাহী হাকিম ও ১০ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করছেন।

কেডিএ খান জাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে। ফুলবাড়ী গেট, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: সাদ্দাম হোসেননির্বাচন কমিশন বলছে, খুলনায় মোট ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৩৪টিই ঝুঁকিপূর্ণ (কমিশনের ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ)। আর ৫৫টি সাধারণ বা ঝুঁকিমুক্ত কেন্দ্র আছে।

খুলনায় ২০১৩ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে আবদুল খালেদ তালুকদার পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে খালেক মেয়র নির্বাচিত হন।