নিত্য ব্যবহার্য পণ্যে ক্ষতিকর কেমিক্যাল, ক্রমশ বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
- আপডেট সময় : ০৯:২৭:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আমরা নানা ধরনের নিত্য ব্যবহার্য পণ্য ব্যবহার করে থাকি। ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করার জন্য টুথপেস্ট কিংবা হাত ধোয়ার জন্য হ্যান্ডওয়াশ সবই আমাদের নিত্ত্ব ব্যবহার্য পণ্য। অনেকে আবার ব্যক্তিগত যত্নে ব্যবহার করে থাকেন নানা ধরনের কসমেটিক্স। এ সকল পণ্যের বিশাল বাজার থাকলেও নেই পর্যাপ্ত আমদানি কিংবা উৎপাদন। যে কারণে এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে কিছু অসাধের ব্যবসায়ী নকল পণ্য তৈরি করে আর এই সকল পন্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ক্ষতিকারক কেমিক্যাল।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে টুথপেস্ট ও হ্যান্ডওয়াসে মিলেছে মাত্র অতিরিক্ত পেরাবেন নামক একপ্রকার কেমিক্যাল যার ব্যবহারে হতে পারে ক্যান্সার সহ নানান ধরনের রোগ। গত ১৫ ই ফেব্রুয়ারি এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের এক গবেষণায় বাংলাদেশের বেশিরভাগ টুথপেস্ট ও লিকুইড হ্যান্ডওয়াশে বিপদজনক মাত্রায় পেরাবেন কেমিক্যাল পাওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। সংস্থাটি দক্ষিণ কোরিয়া একটি প্রতিষ্ঠান অঞ্জিন ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ এর ল্যাব থেকে নমুনা পরীক্ষা করে এর ফলাফল জানায়।
গবেষণায় ঢাকার বিভিন্ন দোকান থেকে ৩০ টেরও বেশি হ্যান্ড ওয়াশ এবং টুথপেস্টের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। অবাক করার বিষয় হল সব নমুনার মধ্যেই নির্ধারিত মাত্রার থেকে অনেক বেশি রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
আরো ভয়াবহ তথ্য হল, বাইশটি নমুনার মধ্যে পাঁচটি পণ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় প্যারামেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এমনকি শিশুদের টুথপেস্টের নমুনার মধ্যেও এ রাসায়নিক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে বেশি দেয়া হয়েছে।
গবেষণায় আরো সাতটি দেশের নমুনা বিশ্লেষণ করা হয় কিন্তু দেখা যায় বাংলাদেশের পণ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় অথচ একই পণ্যে পাকিস্তান ভারত শ্রীলঙ্কা মালদ্বীপ নেপাল ভুটান ও আফগানিস্তানের মতো দেশে এসব ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার অনেকাংশেই কম।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ডঃ মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, আমাদের দৈনন্দিন পণ্যে এত বেশি মাত্রায় রাসায়নিকের ব্যবহার দেখে আমি উদ্বিগ্ন। এগুলো নিরবে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে এবং জীবনকে ঠেলে দিচ্ছে হুমকির মুখে। তিনি আরো বলেন জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এ সকল পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারকদের আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন এবং সরকারের এ বিষয়গুলোর প্রতি আরো বেশি নজরদারি বাড়ানো উচিত।