শিরোনাম
মির্জাপুরে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন Headline Bullet       টাঙ্গাইল ডিএফএ এর সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান জামিলের স্মরণে শোকসভা  Headline Bullet       দেশে এবার নির্মাণ হবে দৃষ্টিনন্দন ২৬১ গম্বুজ মসজিদ Headline Bullet       মির্জাপুরে ফজলুর রহমান খান ফারুক ফুটবলে কালিয়াকৈর চ্যাম্পিয়ন Headline Bullet       অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত, প্রতিবাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন Headline Bullet       নাগরপুরে জনসভাকে ঘিরে প্রকাশ্যে এলো এমপি-উপজেলা আ’লীগের দ্বন্দ্ব Headline Bullet       মির্জাপুরে ডেঙ্গু সচেতনতায় র‌্যালি Headline Bullet       বিয়ের ২ দিন পর পুকুরে গোসল করতে গিয়ে লাশ হলেন যুবক Headline Bullet       নাগরপুরে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত Headline Bullet       মির্জাপুরে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও আইনশৃৃৃঙ্খলা সভা Headline Bullet      

নারী খামারিদের টাকা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পকেটে!

সোনালী বাংলাদেশ নিউজ
সম্পাদনাঃ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ - ০৮:৩৭:৩৬ পিএম


সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) অধীনে দেশি মুরগির ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া টাকা উপকারভোগীদের নানা ধরণের ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিজে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুকুমার চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের মুরগির ঘর নির্মাণের কাজ চলতি বছরের গত জুন মাসে মেয়াদ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো পুরোপুরিভাবে কাজ শুরু করা হয়নি।

রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কোনো ঘর পাওয়া যায়নি। তবে, প্রকল্পের উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের মাদারিয়া এলাকায় তারাকান্দি-ভুঞাপুর আঞ্চলিক সড়কের ওপর মাদারিয়া দেশি মুরগির দল নামে একটি সাইনবোর্ড দেখা যায়। এছাড়া দু’একজন নারী খামারির বাড়িতে সিমেন্টের খুঁটি রাখলেও তা নিম্নমানের সেগুলো স্থাপন করার আগেই কিছু খুঁটি ভেঙে গেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) দেশি মুরগির ঘর নির্মাণের জন্য উপজেলার ৬৭ জন নারী খামারিকে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়াও একই প্রকল্পে ভেড়া পালনের জন্য ঘর নির্মাণে ২৮ জনকে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এদিকে, সেই বরাদ্দের টাকা গত জুন মাসের আগেই খামারিদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা করা হয়। প্রকল্পের শর্তে বলা হয়, নির্ধারিত নিয়মে খামারিদের মুরগির ঘর করে নিতে হবে। এজন্য বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত ব্যয় হলে সংশ্লিষ্ট পিজি সদস্য (খামারি) উক্ত খরচ নিজে বহন করতে সম্মত থাকবেন। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে খামারিদের কাছ থেকে শর্তযুক্ত করে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে লিখিত রাখা হয়।

উপজেলার মাদারিয়া গ্রামের পিজি সদস্যরা বলেন, মুরগির ঘর করার জন্য ২০ হাজার টাকা দিয়েছিল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। পরে সেই টাকার জন্য কৃষি ব্যাংকে ১ হাজার ১০০ টাকা খরচ করে অ্যাকাউন্ট করেছি। টাকা তুলে আনা হয়েছিল ঘর করার জন্য। কিন্তু উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজেই ঘর করে দেবেন বলে টাকা ফেরত দিতে চাপ দেন। পরে প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ভয় দেখান। চাপ সৃষ্টি করলে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখনো তারা ঘরতো দূরের কথা একটা খুঁটিও পাননি মুরগির খামার করার জন্য।

ফলদা মদনবাড়ী এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নারী পিজি সদস্যরা বলেন, পিজি সদস্যদের অফিসে ডেকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুকুমার দাস। এছাড়া মামলার ভয় ও তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলে টাকা দিতে চাপ দেন। তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে। অথচ এই তিন মাসে মুরগিগুলো অনেক বড় হতো। এখন ঘর পাব কিনা জানি না।

মাদারিয়া দেশি মুরগির দল সমিতির সভাপতি জাহানারা বেগম বলেন, টাকা তোলার জন্য প্রাণিসম্পদ থেকে চেক দেওয়া হয়। পরে টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করি ঘর করার জন্য। কিন্তু আমাদের ঘর করতে দেওয়া হয়নি। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজেই ঘর করার জন্য টাকা ফেরত নিয়েছেন। সমিতির একজনও ঘর পাননি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ফলদা ইউনিয়নের মাঠকর্মী আব্দুল কাদের বলেন, ফলদা ইউনিয়নে ৩৮ জন সদস্য রয়েছেন। ঘর নির্মাণের জন্য তাদের চেক দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজে ঘর করে দেওয়ার কথা বলে টাকা ফেরত চেয়েছেন। সদস্যরাও টাকা ফেরত দিয়েছেন। তবে ঘর নির্মাণ প্রকল্পের কমিটির একজন সদস্য হলেও এই বিষয়ে আমাকে কিছুই বলা হয়নি। ঘর করে দেবে কিনা, কবে করবে সেটা জানি না।

এলডিডিপি অধীনে দেশি মুরগির ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত নিজে নেয়া ও কাজে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুকুমার চন্দ্র দাস বলেন, কোনো সদস্যের টাকা আমি নেইনি। ঘর করার আসবাবপত্র প্রকল্প এলাকায় চলে গেছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর নির্মাণের টাকা কর্মকর্তার কাছে রাখার নিয়ম নেই। ঘর করার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ঘর নির্মাণে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয় খবর
%d bloggers like this: