সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে বাঁচতে চাই বিজয় বাদ্যকর
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ০৫:৪১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ৩০ বার পড়া হয়েছে
সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক: এযেনো অসহায়ের কাছে আত্মসমর্পণ।মাথা গোজার ঠাঁই বলতে আছে শুধু ভিটে বাড়ি আর ছোট্ট একটি ঘর।সেই ঘরে বউ,৬ বছরে দুই যমজ মেয়ে আর ১৪ মাসের ছেলেকে নিয়ে তার সংসার।সে ১০মাস আগে ভাগ্যের চাকা বদলাতে সৌদি আরবে পারি দেয় ।সৌদি আরবে গিয়ে পাইলসে সমস্যা হয়।পাইলস অপারেশন করার দুই মাস পর শরীরে ধরা পরে ক্যান্সার।পাঁচ লাখ টাকা ঋন করে প্রবাসে গিয়ে পাঁচ মাসের মাথায় দেশে চলে আসে।বলছিলাম টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আন্দিরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিজয় বাদ্যকরের কথা।
বিজয় বাদ্যকর বাসাইল পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আন্দিরাপাড়া গ্রামের দয়াল বাদ্যকরের ছেলে।
জানা যায়,বাড়ির উঠানে চেয়ারের মধ্যে বসে আছে বিজয়।শুয়ে বসেই দিন কাটছে তার।বেশি শুয়ে ও বসে থাকতেও পারে না।পিঠে ব্যথায় কাতরাচ্ছে, দিন যতই যাচ্ছে অসুস্থতা বাড়ছে।শরীরে বেড়েছে ব্যথা।টাকার অভাবে করতে পারছে না চিকিৎসা।
স্থানীয়রা জানান,বিজয় তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়।বাসাইল স্ট্যান্ডে সেলুনের দোকান ছিল।সেই দোকানেই নরসুন্দরের কাজ করতো।পরিবারিক ভাবে তারা হত-দরিদ্র। বাড়ি ছাড়া আর কিছু নাই।দিন আনে দিন খাই।দারিদ্র্য থাকার কারণে ঋণ করে সৌদি আরবে পাঠাই পরিবার।সৌদি আরবে যাওয়ার পর তার পাইলসে সমস্যা হলে অপারেশন করা হয়।পাইলস অপারেশন করার দুই মাস পর তার ক্যান্সার ধরা পড়ে।আগস্ট মাস পর দেশে চলে আসে।৫ মাস থাকার পর অসুস্থতা নিয়ে দেশে চলে আসে।৫ মাস ধরে তার অসুস্থতা বেড়েছে।বিজয়ের হাটা চলা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।বেশি শুয়ে ও বসে থাকতে পারে না। টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না।৬ বছরের জমজ দুই মেয়ে ও ১৪ মাসের ছেলে সন্তানদের মুখে ঠিক মতো খাবার তুলে দিতে পারছে না।টাকার অভাবে হচ্ছে না তার চিকিৎসা। অসহায় জীবন যাপন করছে বিজয়।
ক্যান্সারে আক্রান্ত বিজয় বাদ্যকর বলেন,আমি নরসুন্দরের কাজ করতাম।বাসাইল স্ট্যান্ডে আমার দোকান ছিল।পরিবারের দারিদ্রতা থাকার কারণে ঋণ করে বিদেশ যায়।বিদেশ যাওয়ার পর আমার পাইলসে সমস্যা হয়।আগে থেকেই অসুস্থতা ছিল বুঝতে পারি নাই।বিদেশেই পাইলসের অপারেশন করায়।অপারেশন করার দুই মাসের মাথায় আমার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে।পাঁচ মাসের মাথায় দেশে চলে আসি।পাঁচ মাস ধরে দেশে আছি।দিন যতই যাচ্ছে অসুস্থতা বাড়ছে।টাকার অভাবে ঠিক মতো চিকিৎসা করতে পারছি না।
তিনি বলেন,আমার তিনটি সন্তান রয়েছে।দুইটি ৬ বছরের জমজ মেয়ে ও একটি ১৪ মাসের ছেলে। টাকার অভাবে তাদের ঠিক মতো খাওয়াতে পারি না।দুই মেয়েকে আমার শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি।টাকার জন্য তাদের লালন পালন করতে পারছি না।তাদের আমি কি খাওয়াবো? টাকার জন্য নিজের চিকিৎসা করতে পারছি না।বাড়িতে ঘর ছাড়া আমার আর কিছু নাই।থাকার মতো শুধু এই ঘরটিই আছে।
তিনি আরও বলেন,আপনারা যদি আমার তিনটি বাচ্চার মুখের দিকে তাঁকিয়ে সহযোগিতা করেন,নিজের জন্য না হলেও আমার ছেলেমেয়েদের জন্য আমি বাঁচতে চাই,তা ছাড়া আমার বাঁচার কোন ইচ্ছা নাই।সকলের কাছে আমার অনুরোধ রইল।
বিজয়ের দাদা সতীশ বাদ্যকর বলেন,আমার নাতি অসুস্থ,ক্যান্সার হয়েছে।টাকার প্রভাবে আমার নাতির চিকিৎসার করতে পারছি না।আপনারা যদি সহযোগিতা করেন তাহলে আমার নাতি বাঁচবে,আর না হলে বাঁচবে না।বাড়িতে ঘর ছাড়া তার আর কিছু নাই।কি বিক্রি করে আমার নাতির চিকিৎসা করব,আমাদের কিছু নাই।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন,বিজয়ের ছোট ছোট তিনটা সন্তান আছে।সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও সবার এগিয়ে আসা উচিত।পাইলস অপারেশন করার পর তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে।হত-দরিদ্র বিজয়ের পরিবার পারছে না তার চিকিৎসা করতে।চিকিৎসার অভাবে দিন যাচ্ছে তার অসুস্থতা বাড়ছে।নেই জমিজমা যে বিক্রি করে চিকিৎসা করবে।বাড়িতে ছোট একটি ঘর ছাড়া কিছুই নাই।
বাসাইল পৌরসভার সাবেক কমিশনার প্রিন্স মাহমুদ বলেন,অসহায় একটি পরিবারের সন্তান বিজয় বাদ্যকর।ঋণ করে সৌদি আরবে যায়।সৌদি আরবে যাওয়ার পর পাইলসে সমস্যা হয়।সৌদি আরবে অপারেশন হলে তার দুই মাস পর ক্যান্সার ধরা পড়লে দেশে চলে আসে।টাকার অভার এখন তার চিকিৎসা হচ্ছে না।বিজয় দেশে আসার পর থেকেই চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে সাহায্যে করেছি।চিকিৎসার ব্যয় একা তার পক্ষে বহন করা সম্ভব না।তার ৬ বছরে দুইটি যমজ মেয়ে ও ১৪ মাসের ছেলে রয়েছে।বাড়ির মধ্যে তার একটি ঘর ছাড়া আর কিছুই নাই। সমাজের বিত্তবান যারা আছেন,তারা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে বিজয়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে।আমি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নূরে-ই-লায়লা বলেন,বিজয়ের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি।একটি আবেদন পেয়েছি।আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে সহযোগিতা করা হবে।












