ঢাকা ১২:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিছানায় কাতরাচ্ছেন ক্যান্সারে শয্যাশায়ী বিজিবি’র সেলিম, দেশবাসির সাহায্য কামনা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪০:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক :  বিনা চিকিৎসায় এক মাস ধরে বাড়ীর বিছানায় কাতরাচ্ছেন কোলন ক্যান্সারে শয্যাশায়ী বিজিবি সদস্য মো. সেলিম আহমেদ (৪৬)। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে বর্তমানে তার কোলন ক্যান্সারের পর্যায় স্টেজ ৪ নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়াও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দামের একটি ক্যামোথেরাপীর মত মোট ১২টি ক্যামোথেরাপী দিতে পারলে অবস্থার উন্নতি হতে পারে,এমন আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসাধীন হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। ওই ব্যয়বহনের সামর্থ্য না থাকায় চলতি বছরের ২৯ নভেম্বর বাড়ীতে ফিরে এসেছেন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়ানো সীমান্তবর্তী জলসীমা সৈনিক সেলিম। টানা বিশ বছর সীমান্তবর্তী জলসীমা রক্ষায় নিবেদিত সৈনিকের দায়িত্ব পালনকারী সেলিমকে একাই লড়তে হচ্ছে আক্রান্ত কোলন ক্যান্সারে বিরুদ্ধে।
১২ তে পা রাখা ছেলে, তিন বছরের মেয়ে, যুবতী স্ত্রী, বিধাব মা ও ছোট এক ভাইসহ পরিবারের ছয় সদস্যের অন্যতম উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই তিনি। ভরণপোষণসহ আনুসাঙ্গিক সকল ব্যয়বহনের একমাত্র চালিকা শক্তি সেলিমের শারীরিক অচলাবস্থায় নিরুপায় পরিবারটির সম্মুখীন দাঁড়িয়েছে সংসার পরিচালনার দৈনন্দিন ভাবনা। ছয় সদস্যের পরিচালনাকারী বিজিবি সৈনিক সেলিমের শারীরিক অচলাবস্থায় সৃষ্টিকর্তার দয়া আর প্রাণভিক্ষার প্রার্থণা ছাড়া যোগান দেয়ায় সহায় সম্বলহীন পুরো পরিবার। এরপরও দেশ ও পরিবারের কল্যাণে বাঁচতে চান সীমান্তরর্ক্ষী সেলিম। কোলন ক্যান্সারের রাজকীয় ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত বিত্তবান দেশবাসির সাহায্য কামনা করেছেন শয্যাশায়ী বিজিবি সদস্য সেলিম, বিধাব মা ও স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা।
বিজিবি সদস্য মো. সেলিম আহমেদ এর চিকিৎসার ব্যয়বহনের সাহায্যের পাঠাতে সোনালী ব্যাংক (পিএলসি) টাঙ্গাইল শাখার ব্যক্তিগত সঞ্চয়ী হিসাব নং-৬০২৫১০১০২২৮৭৭, স্ত্রী’র বিকাশ ও নগদ নম্বর ০১৯৩৩-০১৭৬৭৬সহ যোগাযোগ নম্বর- ০১৯৫৫-৪০৪২১০।
২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সিভিল সৈনিক পদে যোগদান করেন মো. সেলিম আহমেদ (৪৬)। পরিচয়পত্র নং-৫৩১০৮১৪৯১, ব্যক্তিগত নং-আইডব্লিউটি-৫৩০,পদবী-সহঃ-ওবিএম-ড্রাইঃ। বর্তমান কর্মস্থল রাজশাহী ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-১)।
তবে এরআগে দেড় মাস চিকিৎসা চালানোসহ গত ২০২৪ সালের ২২ জুনে পায়ুপথে রক্তক্ষরণের কারণে প্রথম পাইলস্ এর সার্জারী করেন চুয়াডাঙা বিজিবি হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। সার্জারীতে সুস্থ না হওয়ায় দ্বিতীয় সার্জারী করাসহ ঢাকায় পাঠানো সেলিমের দুটি শারীরিক পরীক্ষার ফলাফলে ক্যান্সার সনাক্ত হয়। রোগী ও পরিবারের সদস্যদের আবেদন আর নিজস্ব উদ্যোগে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে ছুটি মঞ্জুর করেন কর্তৃপক্ষ। প্রায় চৌদ্দ মাস যাবৎ রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডস্থ ডা. ফজলুল হক কলোরেকটাল হসপিটাল লিমিটেডে প্রফেসর ডা. এ. কে.এম ফজলুল হক, কলোরেকটাল সার্জন ডা. আশিফ আলমাস হক, ডা. সাকিব সারওয়াত হক, ডা.ইমরান খান, ডা. আল আমিন অভি ও ডা, এস.এম. নেওয়াজ মোর্শেদ এর তত্ত্বাবধানের চিকিৎসাধীন ছিলেন কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত বিজিবি সৈনিক সেলিম।
বেসরকারি হাসপাতালে ৩টি সার্জারি, ৬টি ক্যামোথেরাপি আর ২৮টি রেডিয়েশন থেরাপি প্রয়োগসহ আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ প্রায় ত্রিশ লাখ টাকার মত রাজকীয় ব্যয়ে জমাকৃত, আত্মীয়-স্বজন আর বন্ধুদের সহায়তাসহ ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে উঠেছেন সৈনিকটির পরিবার। ক্যান্সারের সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থায় নতুনরূপে যুক্ত হয়েছে ফুসফুসে পানি জমাট বাঁধার সমস্যা। সৃষ্ট নতুন সমস্যায় দফায় দফায় শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধের অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগছেন তিনি। এরপরও চিকিৎসার সাধ্য অনুযায়ি টাকা না থাকায় কোলন ক্যান্সারসহ নতুন সৃষ্ট ফুসফুসে পানি জমাট বাঁধা অসহনীয় মৃত্যু যন্ত্রণায় দৈনিক ভুগছেন দেশের সীমান্তবর্তী জলসীমা রক্ষার দায়িত্ব পালনকারী বিজিবি সৈনিক সেলিম।
কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত মো.সেলিম আহমেদ টাঙ্গাইল পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডের মেইনরোডস্থ থানাপাড়া দারুল উলুম আলীয় মাদরাসার পশ্চিমাংশের আবাসিক এলাকার বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা বিজিবি গেজেট (১৭১১) ও বিজিবি’র অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মেজর মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ ও শেফালী বেগম দম্পতির এক মেয়ে ও চার ছেলে সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। এক যুগের বেশি সময় আগে শারীরিক সমস্য জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন মেঝ ভাই। নষ্ট রেডিও-টেলিভিশন মেরামত মিস্ত্রি বড় ভাই এক বাড়ীতে বসবাস করলেও স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গড়েছেন পৃথক সংসার। বৈবাহিক কারণে অন্যত্র বসবাস করছেন একমাত্র বোনটিও। বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, ছোট ভাইয়ের ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি শেয়ার হাউজে চাকুরীর যতসামান্য বেতন আর চাকুরীতে যোগদানের পর থেকে নিজ বেতনে বার বছর বয়সী ছেলের লেখাপড়া, তিন বছরের মেয়ে, মা, ছোট ভাই আর স্ত্রীর চিকিৎসাসহ অধিকাংশ চাহিদা, ভরণপোষণ আর আত্মীয়স্বজনের আতিথীয়তা যথাযথভাবে পূরণের চেষ্টা চালিয়ে এসেছেন বিজিবি সৈনিক সেলিম।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিছানায় কাতরাচ্ছেন ক্যান্সারে শয্যাশায়ী বিজিবি’র সেলিম, দেশবাসির সাহায্য কামনা

আপডেট সময় : ০৯:৪০:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক :  বিনা চিকিৎসায় এক মাস ধরে বাড়ীর বিছানায় কাতরাচ্ছেন কোলন ক্যান্সারে শয্যাশায়ী বিজিবি সদস্য মো. সেলিম আহমেদ (৪৬)। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে বর্তমানে তার কোলন ক্যান্সারের পর্যায় স্টেজ ৪ নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়াও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দামের একটি ক্যামোথেরাপীর মত মোট ১২টি ক্যামোথেরাপী দিতে পারলে অবস্থার উন্নতি হতে পারে,এমন আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসাধীন হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। ওই ব্যয়বহনের সামর্থ্য না থাকায় চলতি বছরের ২৯ নভেম্বর বাড়ীতে ফিরে এসেছেন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়ানো সীমান্তবর্তী জলসীমা সৈনিক সেলিম। টানা বিশ বছর সীমান্তবর্তী জলসীমা রক্ষায় নিবেদিত সৈনিকের দায়িত্ব পালনকারী সেলিমকে একাই লড়তে হচ্ছে আক্রান্ত কোলন ক্যান্সারে বিরুদ্ধে।
১২ তে পা রাখা ছেলে, তিন বছরের মেয়ে, যুবতী স্ত্রী, বিধাব মা ও ছোট এক ভাইসহ পরিবারের ছয় সদস্যের অন্যতম উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই তিনি। ভরণপোষণসহ আনুসাঙ্গিক সকল ব্যয়বহনের একমাত্র চালিকা শক্তি সেলিমের শারীরিক অচলাবস্থায় নিরুপায় পরিবারটির সম্মুখীন দাঁড়িয়েছে সংসার পরিচালনার দৈনন্দিন ভাবনা। ছয় সদস্যের পরিচালনাকারী বিজিবি সৈনিক সেলিমের শারীরিক অচলাবস্থায় সৃষ্টিকর্তার দয়া আর প্রাণভিক্ষার প্রার্থণা ছাড়া যোগান দেয়ায় সহায় সম্বলহীন পুরো পরিবার। এরপরও দেশ ও পরিবারের কল্যাণে বাঁচতে চান সীমান্তরর্ক্ষী সেলিম। কোলন ক্যান্সারের রাজকীয় ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত বিত্তবান দেশবাসির সাহায্য কামনা করেছেন শয্যাশায়ী বিজিবি সদস্য সেলিম, বিধাব মা ও স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা।
বিজিবি সদস্য মো. সেলিম আহমেদ এর চিকিৎসার ব্যয়বহনের সাহায্যের পাঠাতে সোনালী ব্যাংক (পিএলসি) টাঙ্গাইল শাখার ব্যক্তিগত সঞ্চয়ী হিসাব নং-৬০২৫১০১০২২৮৭৭, স্ত্রী’র বিকাশ ও নগদ নম্বর ০১৯৩৩-০১৭৬৭৬সহ যোগাযোগ নম্বর- ০১৯৫৫-৪০৪২১০।
২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সিভিল সৈনিক পদে যোগদান করেন মো. সেলিম আহমেদ (৪৬)। পরিচয়পত্র নং-৫৩১০৮১৪৯১, ব্যক্তিগত নং-আইডব্লিউটি-৫৩০,পদবী-সহঃ-ওবিএম-ড্রাইঃ। বর্তমান কর্মস্থল রাজশাহী ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-১)।
তবে এরআগে দেড় মাস চিকিৎসা চালানোসহ গত ২০২৪ সালের ২২ জুনে পায়ুপথে রক্তক্ষরণের কারণে প্রথম পাইলস্ এর সার্জারী করেন চুয়াডাঙা বিজিবি হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। সার্জারীতে সুস্থ না হওয়ায় দ্বিতীয় সার্জারী করাসহ ঢাকায় পাঠানো সেলিমের দুটি শারীরিক পরীক্ষার ফলাফলে ক্যান্সার সনাক্ত হয়। রোগী ও পরিবারের সদস্যদের আবেদন আর নিজস্ব উদ্যোগে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে ছুটি মঞ্জুর করেন কর্তৃপক্ষ। প্রায় চৌদ্দ মাস যাবৎ রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডস্থ ডা. ফজলুল হক কলোরেকটাল হসপিটাল লিমিটেডে প্রফেসর ডা. এ. কে.এম ফজলুল হক, কলোরেকটাল সার্জন ডা. আশিফ আলমাস হক, ডা. সাকিব সারওয়াত হক, ডা.ইমরান খান, ডা. আল আমিন অভি ও ডা, এস.এম. নেওয়াজ মোর্শেদ এর তত্ত্বাবধানের চিকিৎসাধীন ছিলেন কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত বিজিবি সৈনিক সেলিম।
বেসরকারি হাসপাতালে ৩টি সার্জারি, ৬টি ক্যামোথেরাপি আর ২৮টি রেডিয়েশন থেরাপি প্রয়োগসহ আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ প্রায় ত্রিশ লাখ টাকার মত রাজকীয় ব্যয়ে জমাকৃত, আত্মীয়-স্বজন আর বন্ধুদের সহায়তাসহ ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে উঠেছেন সৈনিকটির পরিবার। ক্যান্সারের সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থায় নতুনরূপে যুক্ত হয়েছে ফুসফুসে পানি জমাট বাঁধার সমস্যা। সৃষ্ট নতুন সমস্যায় দফায় দফায় শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধের অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগছেন তিনি। এরপরও চিকিৎসার সাধ্য অনুযায়ি টাকা না থাকায় কোলন ক্যান্সারসহ নতুন সৃষ্ট ফুসফুসে পানি জমাট বাঁধা অসহনীয় মৃত্যু যন্ত্রণায় দৈনিক ভুগছেন দেশের সীমান্তবর্তী জলসীমা রক্ষার দায়িত্ব পালনকারী বিজিবি সৈনিক সেলিম।
কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত মো.সেলিম আহমেদ টাঙ্গাইল পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডের মেইনরোডস্থ থানাপাড়া দারুল উলুম আলীয় মাদরাসার পশ্চিমাংশের আবাসিক এলাকার বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা বিজিবি গেজেট (১৭১১) ও বিজিবি’র অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মেজর মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ ও শেফালী বেগম দম্পতির এক মেয়ে ও চার ছেলে সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। এক যুগের বেশি সময় আগে শারীরিক সমস্য জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন মেঝ ভাই। নষ্ট রেডিও-টেলিভিশন মেরামত মিস্ত্রি বড় ভাই এক বাড়ীতে বসবাস করলেও স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গড়েছেন পৃথক সংসার। বৈবাহিক কারণে অন্যত্র বসবাস করছেন একমাত্র বোনটিও। বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, ছোট ভাইয়ের ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি শেয়ার হাউজে চাকুরীর যতসামান্য বেতন আর চাকুরীতে যোগদানের পর থেকে নিজ বেতনে বার বছর বয়সী ছেলের লেখাপড়া, তিন বছরের মেয়ে, মা, ছোট ভাই আর স্ত্রীর চিকিৎসাসহ অধিকাংশ চাহিদা, ভরণপোষণ আর আত্মীয়স্বজনের আতিথীয়তা যথাযথভাবে পূরণের চেষ্টা চালিয়ে এসেছেন বিজিবি সৈনিক সেলিম।