ঢাকা ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্নীতি বিরোধী মঞ্চের ডাক মান্নার: এ যেন ভুতের মুখে রাম নাম!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুলাই ২০১৮ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাহমুদুর রহমান মান্নার উদ্যোগে ‘ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট স্টেট করাপশন’ আত্মপ্রকাশ করেছে। মূলত অনলাইনের মাধ্যমেই এর প্রচারণার মূল পর্বটি পরিচালিত হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমলে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করবেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। আর মাহী বি চৌধুরী আসছেন ‘প্রজন্ম উদ্যোগ’ নিয়ে। বিভিন্ন দলে পোড় খাওয়া মাহমুদুর রহমান মান্না আর মাহি বি চৌধুরীর এমন রাজনৈতিক স্টান্টবাজি নতুন কিছু নয়।

বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২০১৩ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। এককালে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা মান্না কেন আজ রূপ পাল্টে ভিন্ন পথে? জানতে হলে জানতে হবে মান্নার রাজনৈতিক ইতিহাস।

রাজনীতিতে সেনা হস্তক্ষেপের পর দুই নেত্রীকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা, যা মাইনাস টু ফর্মুলা হিসেবে পরিচিত, তাতে মান্নার সক্রিয় ভূমিকার কথা বেশ আলোচিত। এজন্য তাকে ওয়ান-ইলেভেনের ‘কুশীলব’ বলেন অনেক রাজনীতিক। অন্যদিকে টকশো গুলোতে সরকার বিরোধী নানা মতামত প্রকাশ করে অনেক আগে থেকেই তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। পর্যবেক্ষক মহলের মতে সময়ের সাথে সাথে টকশোতে কথা বলতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বিএনপির রাজনীতির কাছাকাছি এসে পরেছিলেন। ৯৬ এবং ২০০১ সালে পর পর দুবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বগুড়া থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

ছাত্রলীগ থেকে জাসদ, বাসদ, জনতা মুক্তি পার্টি হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে ফেরা মাহমুদুর রহমান মান্না ২০০৭ সালে দলটিতে অপাংক্তেয় হয়ে কিছুদিন বিএনপির দ্বারে ঘুরে এখন নিজেই দল খুলে বসেছেন। বেশ কিছুদিন আগে ফাঁস হয় মাহমুদুর রহমান মান্নার একটি অডিও কলের আলাপ। বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন নিয়ে দুই নেতার দীর্ঘ কথোপকথন রয়েছে ওই টেপে। অডিও আলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশের মিছিল বয়ে আনার কথা বলেন মান্না, বলেন সামরিক হস্তক্ষেপের কথা। টেলিফোনে মান্নাকে ঢাবিতে দুই তিনটি হল দখল করে বিরোধী দলের অবস্থান শক্ত করতে খোকাকে পরামর্শ দিতে শোনা যায়। আর সেটা করতে গিয়ে সংঘর্ষে ২/৩ জন মারা গেলেও তা করতে হবে বলেও মান্নাকে বলতে শোনা যায়। ষড়যন্ত্রের আর দলবদলের রাজনীতি তাই মান্নার জন্য নতুন কিছু নয়।

এক-এগারো পরবর্তী সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না। নির্বাচনের পর দলীয় পদ হারিয়ে গত মহাজোট সরকারের সময়ে তিনি নাগরিক ঐক্য নামে একটি সামাজিক সংগঠন গঠন করেন। সম্প্রতি তিনি ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতিতে বিকল্প শক্তির উত্থানে গণফোরাম, সিপিবি, বাসদ, জেএসডিসহ সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে যুগপৎভাবে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন আর প্রগতির নজির এখন দেশে সীমাবদ্ধ নয়। মানবতা আর অগ্রযাত্রার মিছিলে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা চ্যাম্পিয়ন অব আর্থ থেকে শুরু করে শান্তির বৃক্ষ পর্যন্ত জিতেছেন। সেখানে কিছু অপাংক্তেয় নেতার এমন বিচ্ছিন্ন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ক্যাম্পেইনকে প্রত্যাখ্যানের ডাক দিয়েছে সাধারণ মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দুর্নীতি বিরোধী মঞ্চের ডাক মান্নার: এ যেন ভুতের মুখে রাম নাম!

আপডেট সময় : ০৫:১৯:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুলাই ২০১৮

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাহমুদুর রহমান মান্নার উদ্যোগে ‘ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট স্টেট করাপশন’ আত্মপ্রকাশ করেছে। মূলত অনলাইনের মাধ্যমেই এর প্রচারণার মূল পর্বটি পরিচালিত হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমলে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করবেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। আর মাহী বি চৌধুরী আসছেন ‘প্রজন্ম উদ্যোগ’ নিয়ে। বিভিন্ন দলে পোড় খাওয়া মাহমুদুর রহমান মান্না আর মাহি বি চৌধুরীর এমন রাজনৈতিক স্টান্টবাজি নতুন কিছু নয়।

বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২০১৩ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। এককালে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা মান্না কেন আজ রূপ পাল্টে ভিন্ন পথে? জানতে হলে জানতে হবে মান্নার রাজনৈতিক ইতিহাস।

রাজনীতিতে সেনা হস্তক্ষেপের পর দুই নেত্রীকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা, যা মাইনাস টু ফর্মুলা হিসেবে পরিচিত, তাতে মান্নার সক্রিয় ভূমিকার কথা বেশ আলোচিত। এজন্য তাকে ওয়ান-ইলেভেনের ‘কুশীলব’ বলেন অনেক রাজনীতিক। অন্যদিকে টকশো গুলোতে সরকার বিরোধী নানা মতামত প্রকাশ করে অনেক আগে থেকেই তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। পর্যবেক্ষক মহলের মতে সময়ের সাথে সাথে টকশোতে কথা বলতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বিএনপির রাজনীতির কাছাকাছি এসে পরেছিলেন। ৯৬ এবং ২০০১ সালে পর পর দুবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বগুড়া থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

ছাত্রলীগ থেকে জাসদ, বাসদ, জনতা মুক্তি পার্টি হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে ফেরা মাহমুদুর রহমান মান্না ২০০৭ সালে দলটিতে অপাংক্তেয় হয়ে কিছুদিন বিএনপির দ্বারে ঘুরে এখন নিজেই দল খুলে বসেছেন। বেশ কিছুদিন আগে ফাঁস হয় মাহমুদুর রহমান মান্নার একটি অডিও কলের আলাপ। বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন নিয়ে দুই নেতার দীর্ঘ কথোপকথন রয়েছে ওই টেপে। অডিও আলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশের মিছিল বয়ে আনার কথা বলেন মান্না, বলেন সামরিক হস্তক্ষেপের কথা। টেলিফোনে মান্নাকে ঢাবিতে দুই তিনটি হল দখল করে বিরোধী দলের অবস্থান শক্ত করতে খোকাকে পরামর্শ দিতে শোনা যায়। আর সেটা করতে গিয়ে সংঘর্ষে ২/৩ জন মারা গেলেও তা করতে হবে বলেও মান্নাকে বলতে শোনা যায়। ষড়যন্ত্রের আর দলবদলের রাজনীতি তাই মান্নার জন্য নতুন কিছু নয়।

এক-এগারো পরবর্তী সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না। নির্বাচনের পর দলীয় পদ হারিয়ে গত মহাজোট সরকারের সময়ে তিনি নাগরিক ঐক্য নামে একটি সামাজিক সংগঠন গঠন করেন। সম্প্রতি তিনি ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতিতে বিকল্প শক্তির উত্থানে গণফোরাম, সিপিবি, বাসদ, জেএসডিসহ সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে যুগপৎভাবে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন আর প্রগতির নজির এখন দেশে সীমাবদ্ধ নয়। মানবতা আর অগ্রযাত্রার মিছিলে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা চ্যাম্পিয়ন অব আর্থ থেকে শুরু করে শান্তির বৃক্ষ পর্যন্ত জিতেছেন। সেখানে কিছু অপাংক্তেয় নেতার এমন বিচ্ছিন্ন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ক্যাম্পেইনকে প্রত্যাখ্যানের ডাক দিয়েছে সাধারণ মানুষ।