কালিহাতীতে উপজেলা নির্বাচনের বিজয় মিছিলে হামলার পাল্টপাল্টি অভিযোগ
- আপডেট সময় : ১০:৫১:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিজয় মিছিলে হামলার অভিযোগ ওঠেছে পরাজিত প্রার্থীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার(২৪ মে) উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড়ে ওই হামলার ঘটনায় পরাজিত প্রার্থীর পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এমএ মালেক ভূইয়া সহ উভয় পক্ষের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ খবরে চেয়ারম্যান পদের পরাজিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লার কর্মী-সমর্থকরা এলেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কালিহাতীতে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম আল মনসুর সিদ্দিকী ওরফে আজাদ সিদ্দিকীর নেতাকর্মীরা শুক্রবার বিকালে বিজয় মিছিলের প্রস্তুতি নেয়। এ খবরে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারি তার বাসায় উপজেলা আওয়ামীলীগের একটি পুনমূল্যায়ন সভার আয়োজন করেন। সেই সভায় যাওয়ার সময় কালিহাতী উপজেলা সদরে হাসপাতাল মোড়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও দশকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এমএ মালেক ভূঁইয়ার গাড়ি পৌঁছলে বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তাকে উল্লেখ করে স্লোগান দেয় এবং গাড়িতে হাত দিয়ে থাপ্পর মারে।
এক পর্যায়ে সেখানে অবস্থানরত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিজয় মিছিলের কর্মীদের উপর হামলা করে। বিজয় মিছিলের নেতাকর্মীরাও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের উপর চড়াও হয়। পাল্টাপাল্টি হামলায় এমএ মালেক ভূঁইয়া সহ উভয় পক্ষের ১০-১২ নেতাকর্মী আহত হয়। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয় একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, গত ২১ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তহালুকদার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লার পক্ষে আন্তরিকভাবে ডিনর্বাচনে ভূমিকা রাখেন নাই বলে তাদের অভিযোগ রয়েছে। তাই সাবেক এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারি নিজ বাসায় আওয়ামীলীগের সভা ডেকে সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদারের উপর অনাস্থা এনে সহ-সভাপতি এমএ মালেক ভূঁইয়াকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্ধারন করার উদ্দেশ্যে ওই সভা ডাকা হয়। ওই সভায় আসা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের বিজয় মিছিলে হামলা করে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা
উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও দশকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এমএ মালেক ভূঁইয়া জানান, সাবেক এমপি সোহেল হাজারির বাসায় যাওয়ার সময় তার গাড়িতে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের বিজয় মিছিল থেকে অতর্কিতভাবে হামলা চালানো হয়। এ সময় তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
বিজয় মিছিলের কর্মী-সমর্থকদের হামলায় তিনি ও তার গাড়ি চালক গুরুতর আহত হয়েছন। নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ সিদ্দিকীর লোকজন এ হামলা চালিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, কালিহাতীতে উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা মালেক ভূঁইয়ার উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে অঅওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা এলেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক প্রায় আধা ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা এসে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তিনি এ হামলার জন্য স্থানীয় এমপি আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ছোট ভাই ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ সিদ্দিকীর কর্মীদের দায়ী করেন।
এ বিষয়ে নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আল মনসুর সিদ্দিকী ওরফে আজাদ সিদ্দিকী জানান, তিনি ডিনর্বাচিত হওয়ায় তার নেতা-কর্মীদের বিজয় মিছিলটি হাসপাতাল মোড়ে পৌঁছলে কতিপয় দুষ্কৃতিরী হামলা চালায়। এতে তার কয়েকজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরু ফারুক জানান, নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ সিদ্দিকীর বিজয় মিছিল যাওয়ার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এমএ মালেক ভূঁইয়ার উপর হামলা করে। এসময় তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।প্রকাশ, গত ২১ মার্চ কালিহাতী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা(মোটর সাইকেল) এবং সাবেক মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী(আনারস) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আজাদ সিদ্দিকী বিজয়ী হন।