ঢাকা ০৫:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই ২০১৮ ৩০ বার পড়া হয়েছে

এবার বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে ৩২তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের তালিকায়। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে রাশিয়ান ফেডারেশন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে প্রকল্প নির্মাণে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর হতেই দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের মহাকর্মযজ্ঞ চলছে। সেই মহাকর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় উদ্বোধন হয়েছে দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ।

রাশিয়ান ফেডারেশনের সহযোগিতায় পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর গ্রামে পদ্মা নদীর তীরে প্রায় আড়াইশ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের ইতিহাসে ব্যয়বহুল এই প্রকল্পতে আর্থিক সহযোগিতাও করছে রাশিয়া। রাশিয়া মোট ব্যয়ের ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা আর্থিক সহযোগিতা করেছে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে থাকছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভিভিইআর প্রযুক্তি। থাকছে রাশিয়া উদ্ভাবিত আট মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় সর্বাধুনিক-থ্রি প্লাস জেনারেশন। এই প্রকল্পটিতে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। পৃথিবীতে ৪৩৭টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিতর একটির গর্বিত মালিক বাংলাদেশ। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য রাশিয়া থেকে প্রয়োজনীয় মেশিন আনা হয়েছে। রাশিয়ান ফেডারেশনের নির্মিত প্রযুক্তির অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ সেফটি সিস্টেমের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। কোর ক্যাচার ব্যবহার করার ফলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বাইরে বের হওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ ঝুঁকি মুক্ত।

যে অজপাড়া গাঁয়ে আগে সন্ধ্যা নামলেই গোটা এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত হত, গ্রামবাসী বঞ্চিত ছিল গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে। গ্রামবাসী আজ সব রকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। সেই গ্রামেই আজ নির্মিত হয়েছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের বাহিরে নির্মাণ করা হয়েছে অত্যাধুনিক ‘গ্রিন সিটি’। প্রকল্পের কর্মকর্তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ২০ তলা বিশিষ্ট ১১টি ভবন, ১৬ তলা ৮টি ভবন। এছাড়াও গ্রিন সিটিতে আছে মাল্টিপারপাস হল, চিকিৎসা কেন্দ্র, মসজিদ ও স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের পাশাপাশি ৪৯টি উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছিলেন রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি ইভানোভিচ বরিসভ।

অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার জন্য এই প্রকল্প অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জীবন মান উন্নয়ন ও শিল্পোৎপাদন আরও বিকশিত করতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, এমনটাই মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই ২০১৮

এবার বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে ৩২তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের তালিকায়। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে রাশিয়ান ফেডারেশন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে প্রকল্প নির্মাণে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর হতেই দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের মহাকর্মযজ্ঞ চলছে। সেই মহাকর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় উদ্বোধন হয়েছে দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ।

রাশিয়ান ফেডারেশনের সহযোগিতায় পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর গ্রামে পদ্মা নদীর তীরে প্রায় আড়াইশ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের ইতিহাসে ব্যয়বহুল এই প্রকল্পতে আর্থিক সহযোগিতাও করছে রাশিয়া। রাশিয়া মোট ব্যয়ের ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা আর্থিক সহযোগিতা করেছে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে থাকছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভিভিইআর প্রযুক্তি। থাকছে রাশিয়া উদ্ভাবিত আট মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় সর্বাধুনিক-থ্রি প্লাস জেনারেশন। এই প্রকল্পটিতে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। পৃথিবীতে ৪৩৭টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিতর একটির গর্বিত মালিক বাংলাদেশ। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য রাশিয়া থেকে প্রয়োজনীয় মেশিন আনা হয়েছে। রাশিয়ান ফেডারেশনের নির্মিত প্রযুক্তির অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ সেফটি সিস্টেমের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। কোর ক্যাচার ব্যবহার করার ফলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বাইরে বের হওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ ঝুঁকি মুক্ত।

যে অজপাড়া গাঁয়ে আগে সন্ধ্যা নামলেই গোটা এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত হত, গ্রামবাসী বঞ্চিত ছিল গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে। গ্রামবাসী আজ সব রকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। সেই গ্রামেই আজ নির্মিত হয়েছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের বাহিরে নির্মাণ করা হয়েছে অত্যাধুনিক ‘গ্রিন সিটি’। প্রকল্পের কর্মকর্তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ২০ তলা বিশিষ্ট ১১টি ভবন, ১৬ তলা ৮টি ভবন। এছাড়াও গ্রিন সিটিতে আছে মাল্টিপারপাস হল, চিকিৎসা কেন্দ্র, মসজিদ ও স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের পাশাপাশি ৪৯টি উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছিলেন রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি ইভানোভিচ বরিসভ।

অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার জন্য এই প্রকল্প অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জীবন মান উন্নয়ন ও শিল্পোৎপাদন আরও বিকশিত করতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, এমনটাই মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।