
সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক ; টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের দাসপাড়া এলাকার রুহুল আমিনের ঘরে তালাবন্ধ করে বাড়ি দখল করার অভিযোগ উঠেছে হুন্ডি ও সুদি ব্যবসায়ী দেলজুর রহমান ওরফে রজব ভূইয়ার বিরুদ্ধে।
বর্তমানে রুহুল আমিন তার স্ত্রী লিপি এবং একছেলে রায়হানসহ সৌদি প্রবাসী এবং আরেক ছেলে রুস্তম লেখাপড়ার জন্য ঢাকা থাকায় সেই সুযোগে রুহুল আমিনের বসতবাড়ির চলাচলের রাস্তা কেটে বিচ্ছিন্ন করে বিভিন্ন গাছপালার ডাল কেটে, কাটাযুক্ত ডাল ও বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে বসতবাড়ির রাস্তা বন্ধ করেছে দেলজুর ও তার সন্ত্রাসবাহিনী |
বিষয়টি নিশ্চিত করেন রহুল আমিনের ছেলে রুস্তম ।
এ নিয়ে এলাকায় তোলপার শুরু হয়েছে। দেলজুর ও তার সন্ত্রাসবাহিনীর ভয়ে বাড়িতে যেতে পারছেন না রুস্তম। যেকোন মুহূর্তে প্রাণনাশসহ বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশংঙ্খা রয়েছে তার। এ বিষয়ে গত ৪ জানুয়ারী মির্জাপুর থানায় রুস্তম বাদী হয়ে দেলজুরসহ সাতজন ও অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের বিবরনে দেখা যায়, রুহল আমিনের ছেলে রুস্তম ঢাকায় লেখাপড়া করেন এবং তার পিতামাতা ও ভাই সৌদি প্রবাসী। মাঝেমধ্যে রুস্তম বাড়ি দেখশোনা করার জন্য ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন। ১নং বিবাদী দেলজুর একজন সুদি এবং হুন্ডি ব্যববসায়ী পক্ষান্তরে দাসপাড়া এলাকার মসজিদ ও মাদ্রাসার সভাপতি বটে। তিনি দির্ঘদিন যাবৎ রুস্তমের পিতামাতার নিকট অহেতুক টাকা দাবি এবং বিভিন্ন সময় বাড়ি দখল করার হুমকি দিয়ে আসছে। রুস্তম ও তার পরিবার বাড়ি না থাকার সুযোগে গত ২৪ ডিসেম্বর/২২ সকাল আনুমানিক ১০ টার সময় দেলজুর তার সন্ত্রাসবাহিনী নিয়ে রুহুল আমিনের বসত বাড়ির চলাচলের রাস্তা কেটে বিচ্ছিন্ন করে বিভিন্ন কাটাযুক্ত ডালপাল ও বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। উক্ত ঘটনাটি রুস্তম লোকমারফতে শুনতে পেরে এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মাতাব্বরদেরকে বিষয়টি অবগত করেন।
মেম্বার চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মাতাব্বর রাস্তার বেড়া তুলে দিতে বলেছেন দেলজুরদের । মেম্বার চেয়ারম্যানের ও স্থানীয় মাতাব্বরদের কথা অমান্য করে গত ৩ জানুয়ারী সকাল ৯ টার সময় দেলজুর তার বাহিনী নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রুহুল আমিনের বাড়িত বেআইনীভাবে প্রবেশ করে বসতবাড়ির ঘরের ভিতর প্রবেশ করে তার বসত ঘরের আসবাপত্র ভাংচুর করে এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায় এবং আনুমানিক পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতি করে এবং বাড়ি দখল করার উদ্দেশ্যে সকল ঘরে তালা দেয়।
দেলজুর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী বলেন ,কেউ আইনের আশ্রয় নিলে প্রাণনাসের হুমকি দেয় রুস্তমের পরিবারকে ।
বিবাদী দেলজুর বলেন, আমি রুস্তমের মা লিপি বেগমের নিকট টাকা পাই এই কারনে রাস্তা কেটেছি বেড়া দিয়েছি এবং ঘরে তালা দিয়েছি।
মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, বেড়া দেওয়া, রাস্তা কাটা ও ঘরে তালা দেওয়ার ঘটনাটি সত্য। আমরা রাস্তা মেরামত, রাস্তায় বেড়া দেওয়া ও ঘরের তালা খুলে দেওয়ার কথা বলেছি। তারা কথা না মানায় আইনের আশ্রয় নিয়েছে। শুনতে পারলাম গতকাল পুলিশ গিয়ে ঘরের তালা খুলে দিয়েছে।
বাড়ির মালিক সৌদি প্রবাসী মো. রুহুল আমিনের সাথে মোবাইলে বলেন, আমি মির্জাপুর থানাধীন ভাতগ্রাম মৌজাস্থ সাবেক দাগ-৮২৫/৮২৬/৮২৭ হাল দাগ- ৮১১/৮১২ খতিয়ান এসএ-৮১, ডিবি ৯৪৭ জমির পরিমান বাড়ি -৩৭ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ ভূমি ২০১০ সালে সাব-কবলা মূলে ক্রয় করিয়া মালিক হইয়া বসত বাড়ি নির্মান করিয়া বসবাস করতেছি। দেলজুল আমার ও আমার স্ত্রীর নিকট বিভিন্ন সময় টাকা চাইত। টাকা না দেওয়ায় আমি ও আমার স্ত্রী ছেলে বিদেশ আসার এই সুযোগে বেআইনীভাবে আমার ঘরে তালা ও আমার বাড়ি থেকে চলাচলের রাস্তা কেটে বেড়া দিয়েছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের নিকট সঠিক বিচার চাই।
মির্জাপুর থানার তদন্তকারী অফিসার এস. আই মো.শাজাহান বলেন, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ঘটনা স্থলে যাই এবং রাস্তা কাটা ও বেড়া সহ ঘরের তালা দেওয়ার ঘটনার সত্যতা পাই।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, দাসপাড়া এলাকার ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টির তদন্তের জন্য এস, আই মো. শাজাহানের নিকট দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয় হবে।