
সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারকে অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ইউনিয়নের ৮ জন নির্বাচিত সদস্য।
শুক্রবার(১১ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সাগরদিঘী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াজেদ আলী ও ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য ফরহাদ আলী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তারা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম-দুর্নীতি ও ইউপি সদস্যদের লাঞ্ছিত করার একাধিক অভিযোগ ঘাটাইল উপজেলা ও টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘাটাইল উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগেরই তদন্ত করা হয় নাই। ২-১টি দপ্তরের পক্ষ থেকে তদন্তের নামে ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের বাড়িতে গিয়ে বাগানের ফলমূল নিয়ে চলে এসে বলা হয়েছে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বাধ্য হয়ে তারা বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কাছে ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়ে আবেদন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়- ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সভায় সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে তাদের অজান্তে পছন্দের সদস্যকে প্যানেল চেয়ারম্যান মনোনীত করেন। মাসিক ও উন্নয়ন সভায় সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে চেয়ারম্যানের ইচ্ছেমত পরিষদের রেজুলেশন করেন। পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব সভায় উপস্থাপন না করে ইচ্ছেমত কার্যসম্পন্ন করেন। প্রকল্পের নামে প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক ইউপি সদস্যের কাছ থেকে এক লাখ করে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। টাকা ফেরত ও তার বিরুদ্ধে কথা বললেই ইউপি চেয়ারম্যান ভয় ও হুমকি-ধমকি দিয়ে থাকেন।
অভিযোগে বলা হয়- টিআর, কাবিখা ও এলজিএসপি প্রকল্পের নামমাত্র সভাপতি দিয়ে নিজেই প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির কাজ না করেই তিনি প্রায় ১৪ লাখ টাকা ইউপি সদস্যদের ছেলে, মেয়ে, ভাই ও পরিবারের অন্যান্যদের নামে বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে নিজ ইচ্ছেমত বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও মাতৃত্বকালীনসহ বিভিন্ন ভাতা এবং টিউবওয়েল, সেলাই মেশিন, সোলার প্যানেল, হুইল চেয়ার ও কৃষি উপকরণ এবং ভিজিডি কার্ড স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। বতর্মান সময় পর্যন্ত এডিপি ননকষ্ট ও ১ শতাংশ প্রকল্পগুলোর কোন কাজ না করে পুরো টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন গাছ বিক্রি মাধ্যমে চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অথচ ইউপি সদস্যদের সম্মানী ভাতা অদ্যাবধি প্রদান করেন নাই।
ইউপি সদস্যরা এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অবিলম্বে ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের অপসারণসহ শাস্তির দাবি জানান।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার মুঠোফোনে জানান, সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে। সাগরদিঘী ইউনিয়নের সকল প্রকল্প ইউপি সদস্যরা বাস্তবায়ন করে থাকেন। একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়ে তিনি একটি চিঠি পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, সুরুজ মিয়া, খলিলুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য রুবি আক্তার, মরিয়ম আক্তার ও ফাতেমাতুজ জোহরা মুনমুনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।