সোনালী বাংলাদশে নিউজ ডেস্ক :ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ ও পশুবাহি ট্রাকের কারনে যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে কচ্ছপ গতি। এতে নাকাল হয়ে পড়েছে উত্তর ও দক্ষিনবঙ্গগামী ঘরমুখো সাধারণ মানুষ। তবে ঢাকামুখি যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া সিরাজগঞ্জের হটিকমরুল মোড় এবং নলকা সেতু দিয়ে গাড়ি ঠিকমত না টানতে পারায় বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজা ছয়বারে সাড়ে ৬ ঘন্টা বন্ধ করে দেয়া হয়। এ কারনে টাঙ্গাইল অংশে ৪০ কি.মি যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বাবুল হোসেন নামের বাসের যাত্রী জানান, তিনি ভোর চারটায় ঢাকার গাবতলী থেকে গাড়িতে উঠেছেন। এখন দুপুর সাড়ে ১টা। কিন্তু এখন পর্যন্ত টাঙ্গাইলের সীমানা পার হতে পারেননি। দীর্ঘ দুই ঘন্টা ধরে টাঙ্গাইলের বাইপাসেই রয়েছেন।
পাবনাগামী বাসের হেলপার সিরাজ উদ্দিন জানান, ভোর পাঁচটায় তিনি গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে যাচ্ছেন। সকাল সাড়ে আটটায় তিনি টাঙ্গাইল সীমানায় ঢুকেছেন। কিন্তু এখন দুপুর সাড়ে ১২টা। তিনি রাবনা বাইপাস পার হতে পারেননি।
শনিবার দুপুরে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের উত্তর ও দক্ষিনবঙ্গগামী লেন অতিরিক্ত যানবাহনের কারনে পুরোটাই বন্ধ রয়েছে। তবে ৫/১০ মিটিনের জন্য গাড়ি চলাচল করলেও আবার নগর জলফৈ এলাকায় প্রশাসন বন্ধ করে দেন। তবে পুলিশ বলছেন, যানজট মুক্ত রাখতেই এ ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তবে এ অবস্থায় সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছে নারী ও শিশুরা। একদিকে যানজট অন্যদিকে প্রচন্ড গড়মে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন তারা। আবার দেখা যায়, গাড়ি থেকে নেমে নারীরা তাদের প্রাকৃতিক কাজ সাড়তে মহাসড়কের পাশের কোন বাড়িতে ঢুকে পড়ছেন।
এদিকে এ অবস্থ্যা কাজে লাগাচ্ছেন মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠা কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। তারা যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুন দামে সকল পন্য বিক্রি করছেন। এমনই চিত্র দেখা যায়, নগর জলফৈ বাইপাস মোড়ের বিভিন্ন দোকানে। তারা আধা লিটারের কোমল পানির বোতল বিক্রি করছেন ২৫/৩০ টাকায়।
কয়েকজন বাস চালক জানান, এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের সুবিধা ভোগ করতে পারলেও এলেঙ্গার পর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেনে গাড়ি চালাতে হয়। ঈদে এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ দ্বিগুনেরও বেশি বেড়ে যায়। এছাড়া এলেঙ্গায় রাস্তার অবস্থা বেহাল, এরপর জামালপুর ও ময়মনসিংহের আঞ্চলিক মহাসড়কের যানবাহনগুলো লিংরোড দিয়ে প্রবেশের সময় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, সিরাজগঞ্জের নলকা সেতুতে গাড়ী টানতে না পাড়ায় টাঙ্গাইল অংশে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারনে বঙ্গবন্ধু সেতুতে দীর্ঘ লাইন হয়ে যায়। এজন্য সেতুর পর থেকে চাপ কমাতে থেমে থেমে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলাম জানান, ঘরমুখো মানুষদের নিরাপদে বাড়ি ফেরা নির্ভিঘœ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ফিটনেস বিহীন মহাসড়কে চলাচলরত গাড়ীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এছাড়াও তিনিসহ (জেলা প্রশাসক) উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বিপিএম জানান, সিরাজগঞ্জের হটিকমরুল ও নলকা সেতুতে গাড়ি ঠিকমত টানতে না পারায় বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজা ছয় বারে সাড়ে ৬ ঘন্টা বন্ধ রাখা হয়। এ কারনে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব থেকে টাঙ্গাইল অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে প্রায় ৭০০ পুলিশ মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করায় শনিবার বিকেলের মধ্যেই যানজট নিরসন হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।