
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি :
৯২ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয়, গ্যাস বিহীন, পরিবেশ বান্ধব এবং সম্পুর্ন দূষন মুক্ত এসি ও ফ্রিজ আবিষ্কার করেছেন কলেজ ছাত্র শরীফুল ইসলাম শরীফ (২১)। দরিদ্র পরিবারের সন্তান শরীফ দীর্ঘ দিন প্রচেষ্টার পর অবশেষে তার নিজের প্রচেষ্টার সফল ভাবে গ্যাস বিহীন ও দূষন মুক্ত এসি এবং ফ্রিজ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। তার আবিষ্কারের নাম দিয়েছেন শরীফ পিউর কুলিং টেকনোলজি। আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে ৯২ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পরিবেশ বান্ধব, গ্যাস বিহীন ও দূষন মুক্ত এসি এবং ফ্রিজ আবিষ্কারের কথা ঘোষনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তার আবিষ্কৃত এসি ও ফ্রিজ উপস্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মো. একাব্বর হোসেন এমপিসহ গন্যমান্য ব্যক্তিগন উপস্থিত ছিলেন।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ৯ নং বহুরিয়া ইউনিয়নের চান্দুলিয়া গ্রামে শরীফুল ইসলাম শরীফের বাড়ি। তার পিতার মো. ছোরত আলী মিয়া। শরীফুল ইসলাম করটিয়া সরকারী কলেজের সম্মান (গণিত) শ্রেণী থেকে এ বছর ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন। আজ শনিবার শরীফ জানায়, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে পৃথিবীর সব চেয়ে সাশ্রয়ী এবং সম্পুর্ন পরিবেশ বান্ধব (সিএফসি গ্যাস বিহীন) এসি ও ফ্রিজ আবিষ্কারের জন্য চেষ্টা করে আসছিলেন। দরিদ্র পিতা মাতার সংসারে এক দিকে পড়াশোনা অপর দিকে এসি ও ফ্রিজ আবিষ্কার। ৯ সদস্য পরিবারের কোন দিন খেয়ে আবার কোন দিন না খেয়েই চলে তাদের সংসার। অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও তিনি তার সফললতা পেয়েছেন। তিনি জানান, বর্তমান বাজারে পরিবেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর সিএফসি গ্যাস ব্যবহার এয়ারকন্ডিশনার (এসি) এবং রেফ্রিজারেটর (ফ্রিজ) ও বিভিন্ন কুলিং মেশিন তৈরী করা হয়। এই সিএফসি গ্যাস বায়ু মন্ডলের ওজোন স্তরকে মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য করছে এবং শিতল বিক্রিয়ার মাধ্যমে ওজোন স্তর ক্ষয় করে চলছে। এতে মানুষের ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, শ^াসনালীর প্রদাহ, ব্রংকার্টস, ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ ও চোখের অসময়ে ছানি পরে। ইউভি রশ্মি প্রভাবে সালোকেসংশ্লেষন ব্যহৃত হবে এবং খাদ্য শস্যে তেজক্রিয়তা দেখা দিবে। শরীফ পিউর কলিং টেকনোলজিতে এই সিএফসি গ্যাস একটুও ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। তাই জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে ইহা ২৪ ভাগ কার্যকর ভুমিকা রাখবে এবং জলবায়ুর পরিবর্তন ২৪ ভাগ কমে আসবে। বর্তমানে এক টন এসিতে ১৫০০-২০০০ ওয়ার্ট বিদ্যুৎ লাগে। যেখানে শরীফ পিউর কুলিং টেকনোলজির এসিতে লাগকে মাত্র ১৫০ ওয়ার্ট বিদ্যুৎ। অর্থাৎ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে ৯২ ভাগ। এক টন সাইজের একটি এসির দাম পরবে ১৭-১৮ হাজার টাকা এবং ছোট, মাধ্যম ও বড় আকারের একটি ফ্রিজের দাম পরবে ৯-১৫ হাজার টাকা।
এদিকে আজ শনিবার মির্জাপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত ভাবে শরীফ পিউর কলিং টেকনোলজির স্বত্তাধিকারী শরীফ তুলে ধরেন বর্তমানে প্রচলিত প্রযুক্তিতে এক টন এসি চলতে ১৫০০-২০০০ ওয়ার্ট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। শরীফের আবিষ্কৃত এসপিসিটিতে এক টন এসি চলতে মাত্র ১০০-১২০ ওয়ার্ট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সাধারন প্রচলিত পদ্ধতিতে এক টন এসি ও ফ্রিজ চালাতে বিদ্যুৎ ২২০ ভোল্ট প্রয়োজন। এসপিসিটির শরীফের আবিষ্কৃত এসি ও ফ্রিজে লাগবে ১২ ভোল্ট বিদ্যুৎ। সাধারন প্রচলিত প্রত্রিয়ায় সিএফসি গ্যাস এর ব্যবহার বাধ্যতামুলক। এসপিসিটিতে ক্ষতিকর সিএফসি ব্যবহারের কোন প্রয়োজন নেই। সাধারন প্রচলিত পদ্ধতিতে সিএফসি গ্যাস বায়ু মন্ডলের ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে। এসপিসিটি প্রত্রিয়ায় বায়ু মন্ডলের ওজোন স্তর ধ্বসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। সাধারন প্রচলিত পদ্ধতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বর্তমান প্রযুক্তি ২৪ ভাগ দায়ী। এসপিসিটি প্রযুক্তি ব্যবহারে বৈশি^ক উজ্ঞতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তন সহজেই রোধ করা যায়। বর্তমান প্রচলিত পদ্ধতিতে শীতলী করন এর সময় সিস্টেম কর্তৃক ব্যাপক তাপ পরিবেশ উন্মুক্ত হয়। ফলে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শরীফের আবিষ।কৃত এসপিসিটি পদ্ধতিতে সিস্টেম কর্তৃক খুব অল্প তাপ নির্গত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মো. একাব্বর হোসেন ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক ও লন্ডনের কুইন মেরি বিশ^বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মেধাবী ছাত্র মো. তাহরীম হোসেন সীমান্ত, মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাদ্দাম হোসেন, সাধারন সম্পাদক মো. সিয়াম হোসেন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আবু বকর সিকদার, সাধারন সম্পাদক মো. ওয়াকিল আহমেদ, মির্জাপুর সরকারী কলেজের শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মোবারক হোসেন, সাধারন সম্পাদক মো. মারুফ হোসেন, করটিয়া সরকারী সাদৎ কলেজের ছাত্র মো. মোস্তাফা, মো. সামির হোসেন ও মিজানুর রহমানসহ গনমাধ্যমকর্মীরা।
এ ব্যাপারে শরীফুল ইসলাম শরীফ বলেন, আমার এই শরীফ পিউর কলিং টেকনোলজি পদ্ধতি তৈরী করতে আমার পরিবার সর্বশান্ত হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক সংকটের কারনে অনেক কাজ করতে পারছি না। পড়াশোনা করতেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী ও শিল্প মন্ত্রীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট সার্বিক সহযোগিতার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন।