সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক ঃ টাঙ্গাইলে ফসলি জমির উপর জোর পূর্বক ব্যাক্তিগত চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামে। একটি সাদা কাগজে এলাকার কয়েক জনের স্বাক্ষর নিয়ে একটি কাগজ তৈরী করে দখলকারী মিঞা চাঁন জমির মালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কাউকে অবহিত না করেই ফতেপুর মৌজার ১০৭২ দাগের ৪১ শতাংশের কাতে .০৭৫ শতাংশ জায়গা জোর পূর্বক দখল করে ধানি জমির উপর রাস্তাটি নির্মান করছেন বলে জানা গেছে। বার বার নিষেধ করা সত্বেও অবৈধ নির্মান কাজ চালিয়ে যাওয়ায় এই জমির মালিক বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছে। জমিটির উপর বিজ্ঞ আদালত গত ৪ এপ্রিল ১৪৪ ধারা জারি করেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দাইন্যা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়াডের ফতেপুর গ্রামের ফতেপুর মৌজার ১০৮২ দাগে মাটি ভরাট করে বাড়ী নির্মানের কাজ চলছে। বাড়ী নির্মান করছেন মোঃ মিঞা চাঁন। পাশে ১০৭২ দাগে ৪১ শতাংশ জায়গা মালিক আব্দুল হামিদ মিঞার ধানের জমি। এই জমি ২৯ জানুয়ারী ১৯৪৭ সালে হারান চন্দ্র সাহার কাছ থেকে সাব কওলা দলিলে ক্রয় করেন তিনি। এই ধানী জমির উপর .০৭৫ শতাংশ জায়গা নিয়ে চলাচলের জন্য ইতিমধ্যে জায়গার মালিক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অজ্ঞাতেই রাস্তা নির্মান করে ফেলেছে মোঃ মিঞা চাঁন। রাস্তার বাউন্ডারী নির্মান করা হয়েছে আরসিসি ঢালাই করে। আবাদী বোরো ধানের উপর মাটি ফেলা হয়েছে জায়গার মালিকের অজ্ঞাতে। বার বার নিষেধ করা সত্বেও তিনি নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জমির মালিককে বিভিন্ন ভাবে হুমকী এবং হয়রানী করা হচ্ছে বলে জানা যায়।
মিঞা চাঁন এর কাছে জানতে চাওয়া হলে কেন ব্যাক্তিগত রাস্তা নির্মান করেছেন অন্যোর জমির উপর। তিনি জানান, উনার কাছে চুক্তি নামা আছে। চুক্তি নামা দেখতে চাইলে তিনি একটি সাদা কাগজের উপর লেখা একটি চুক্তি নামা নিয়ে আসেন। যেখানে জমির মালিকের কোন স্বাক্ষর নেই। নেই স্থানীয় কোন জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর। তার পছন্দের কিছু লোকের স্বাক্ষর নিয়ে একটি চুক্তি নামা তৈরী করেছেন সাদা কাগজে।
জমির মালিক বর্তমানে যুক্তরাষ্টে বসবাস করছে। জমিটি দেখা শোনা করে তার মেঝ ছেলে মোঃ ইউসুব আলী। এ প্রসঙ্গে মো” ইউসুব আলী বলেন, আমরা বর্তমানে টাঙ্গাইল শহরের প্যাড়াড়াইস পাড়ায় থাকি। দীর্ঘ দিন হলো গ্রামে থাকি না। গত ২২ মার্চ লোক মারফত জানতে পারি আমাদের জমির উপর মিঞা চাঁন অবৈধ ভাবে রাস্তা নির্মাণ করছে। আমি গিয়ে বাঁধা দিলে আমার কথায় তারা কান দেয়নি। ফলে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করলে গত ৩০ এপ্রিল জায়গার উপর কোন ধরেনের নির্মান কার্যক্রম নিষেধ করে মহামান্য আদালত ১৪৪ ধারা জারি করে। বর্তমানে জায়গার উপর ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্বে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমি মাননীয় আদালতের কাছে এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ আবু সাইদ বলেন, মিঞা চাঁন এর ১০৮২ দাগের জায়গার আমরা মাপ দিয়েছি বাসা করা জন্য। কিন্তু ১০৭২ দাগে রাস্তার কোন মাপ হয়নি। যেহেতু রাস্তা নির্মানের সময় কোন জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলনা, তাই বলতে পাবরো না তিনি কোন দলিদের বলে অন্যের জায়গার উপর রাস্তা নির্মাণ করেলেন।
দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ লাভলু মিঞা বলেন, বাদী পক্ষ যখন বলছে তারা জায়গা দেয় নাই, তাহলে বাদী পক্ষের দাবীই সঠিক, কারন বিবাদী পক্ষ কোন লিখিত আইনগত ভাবে বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। রাস্তা নির্মানের সময় আমরা কেউই উপস্থিত ছিলাম না। যেহেতু বিবাদী পক্ষ কোন ধরনের চুক্তির কাগজ দেখাতে পারছে না তাই রাস্তা নির্মাণ অবৈধ হয়েছে।