সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক : বংশাই নদীর টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল ধলাপাড়া দিয়ে বয়ে যাওয়া অংশে দুই ধারে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক লেয়ার মুরগীর খামার। এসব খামারের বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে। ফলে অতি মাত্রায় পানি দূষিত হওয়ায় মরে ভেসে উঠছে মাছ। পানির সংস্পর্শে মানুষের শরীরে দেখা দিচ্ছে নানা ধরনের চর্ম রোগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর দুই ধারে গড়ে ওঠা লেয়ারের বর্জ্য কোন স্থানে ড্রেন আবার কোন স্থানে পাইপ দ্বারা সরাসরি নদীর পানির সাথে সংযোগ দেয়া হয়েছে। পানিতে ভাসছে মুরগীর পালক। পানির রং এতটাই কালো রূপ ধারণ করেছে যে মানুষ তো দূরে থাক গবাদি পশুও নাকি গোসল করানো হয় না। সারা বছরই কম বেশি মাছ পাওয়া যেত এ নদীতে। আর এ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত ধলাপাড়া বড় মেধার গ্রামের প্রায় ২০-২৫ ঘর জেলে পরিবার। নদীর দূষিত পানি দিয়ে বোরো ধানের সেচ কাজ চালাচ্ছে কৃষক। এতে করে ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর পানির সাথে বর্জ্য মিশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাসা-বাড়িতে থাকা কষ্ট হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় ক্ষতিসহ তাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ হচ্ছে। বড় মেধার গ্রামের জেলে সাধন দাস জানান, লেয়ার মুরগির বর্জ্য এতো বেশি পরিমানে ফেলা হচ্ছে যে, যাও দু’একটা মাছ আছে তাও মরে ভেসে উঠছে। কলেজ ছাত্র বিদ্যুৎ বলেন, আগে নদীতে নেমে গোসল করতাম আর এখন গোসল করলে ঘাঁ, চুলকানি হয়। ধলাপাড়া গ্রামের খামারি গিয়াস উদ্দিন বলেন, বর্জ্য নদীতে ফেলতেছি। আমার গ্যাস প্লান্ট আছে আর ফেলব না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বিশ^াস বলেন, সরাসরি লেয়ারের বর্জ্য পানিতে ফেললে সেই দূষিত পানি দ্বারা সেচ কাজ চালালে ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, শুধু মাছ নয়, লেয়ারের বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে জীববৈচিত্রের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। মাছ প্রজনন ক্ষমতা হারাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন প্রাকৃতিক মাছ হারিয়ে যাবে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. আব্দুল মান্নান বলেন, খামার গুলোর আইনগতভাবে কোন বৈধতা নেই। তাদের প্রাণি সম্পদ অফিসে কোন রেজি: নেই।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি খামার স্থাপনের কারনে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয় ,তবে সরেজমিনে তদন্ত করে খামার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।