সোনালী বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক ঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে জোর করে মাদক দ্রব্য সেবন করানো চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৫ জন গুরুত্বর আহত হওয়ার ঘটনার বিচার না হওয়ায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর আশংকা বিষয়টি মিমাংশা না হলে যে কোন সময় আবার সংর্ঘষ বেঁধে যেতে পারে। ঘটতে পারে প্রানহানির ঘটনা। গত বুধবার(১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের ফুলকী দক্ষিন পাড়ায় স্থানীয় এলাকাবাসী ও খলিফা(হাজাম) সম্প্রদায়ের মধ্যে এ সংর্ঘষের ঘটনাটি ঘটে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি গুরুত্বর আহত মুকুল মিঞা(৫৩) এই প্রতিবেদকে জানান, আমি কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হাজম সম্প্রাদয়ের লোকজন রামদা, ফচ্কা, ফালা, সুড়কি নিয়ে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার মাথায় কোপ দিয়েছে। ফচ্কা দিয়ে আমার সারা শরীরে আঘাত করেছে। আমার ডান হাত ভেঙ্গে দিয়েছে।এই হামলার হুকুম দিয়েছে ফজলু মেম্বার ও যুবরাজ। আমি এই হামলার বিচার চাই। ভয়ে আমার পরিবার এলাকায় থাকতে পারছে না।
সংঘর্ষের ঘটনা প্রসঙ্গে সেনা বাহিনী থেকে অবসর নেওয়া ইদ্রিস আলী (৬০)বলেন, আমি জানতে পারি বাজারে হাজাম সম্প্রদায়ের বেশ কিছু ছেলে আমাদের এলাকার রবীনকে মারধর করছে ,এলাকার এক লোকের দোকান ভাংচুর করছে। আমি ফিরাতে গেলে আমাকেও মারধর করে। পরে এলাকার মেম্বারের কাছে বিচার দিতে গেলে মেস্বারের লোক জনও আমাকে মারধর করে।
ফুলকী দক্ষিন পাড়ার সিদ্দিক মিঞা জানান, ১৭ এপ্রিল সন্ধায় প্রায় ২০০/২৫০ জন হাজাম সম্প্রদায়ের লোকজন দল বেধে এসে আমাদের এলাকায় আক্রমন করে ইউএনও সাহেবের বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয়। রামদা, ফালা, সুড়কি, ফচ্কা নিয়ে আক্রমন করে ৫ জনকে গুরুত্বর জখম করে। তারা বর্তমানে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমরা আতংঙ্কে আছি আবার কখন আক্রমন হয়। এ হামালার সুষ্ঠ বিচার চাই।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুর মতিন ঘটনাস্থল পরর্দিশন করেছেন। এ ঘটনায় বাসাইল থানায় ১৮ এপ্রিল একটি মারমারির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফুলকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন,বিষয়টি আমি শুনে আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আহতরা সুস্থ হয়ে আসলে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে এর মিমাংশা করা যাবে বলে আমি আশাবাদী।
এ প্রসঙ্গে বাসাইল থানার এস আই, মামলার আইও মোঃ তাজউদ্দিন জানান, এ ঘটনার পর গত ১৮ এপ্রিল বাসাইল থানায় মোঃ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ৩৪ জনেকে আসামী করে একটি মারমারি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ২৯/১৯ জিআর। এই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
উল্লেখ্য, দেড় মাস র্পূবে স্থানীয় নজরুলের ছেলে রবীন(১৭) রাত সাড়ে নয়টার দিকে দক্ষিন পাড়া বাজারে মোবাইলে টাকা রির্চাজ করতে যায়। এ সময় খলিফা সম্প্রদায়রে কাশেমের ছেলে রানা(২০)ও আক্কাছের ছেলে ইমন (২১) রবীনকে জোর করে মাদক সেবন করতে বলে। রবীন বাধা দিলে রানা এবং ইমন ওই সময় রবীনকে মারধোর করে। এই ঘটনার সূত্র ধরেই গত ১৭ এপ্রিল খলিফা সম্প্রদায়ের লোক জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্থানীয়দের বাড়ী ঘরে হামলা চালিয়ে ৫ জনকে গুরুত্বর আহত করে, বেশ কয়েকটি বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং এলাকায় ব্যাপক ভাংচুর করে।