শিরোনাম
ভূঞাপুরে বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল কেড়ে নিলো দুইজনের প্রাণ Headline Bullet       নাগরপুরে পথসভায় উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম Headline Bullet       মির্জাপুরে দুস্থ ও হতদরিদ্রদের মাঝে হুইল চেয়ার ও নগদ অর্থ প্রদান Headline Bullet       আন্তঃজেলা ভলিবল প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন টাঙ্গাইল Headline Bullet       বাজেটে কৃষিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি—- কৃষিমন্ত্রী Headline Bullet       দীর্ঘ ৯ বছর পর জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণায় টাঙ্গাইল বর্ণাঢ্য আনন্দ মিছিল  Headline Bullet       বীর নিবাস’ আবাসন কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Headline Bullet       মধুপুরে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল ভ্যানে থাকা স্বামী-স্ত্রী-সন্তানসহ ৪ জনের   Headline Bullet       মির্জাপুরে ইউএনওর উদ্যোগে ফলজ বৃক্ষের চারা বিতরণ Headline Bullet       টাঙ্গাইলে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উদযাপন Headline Bullet      

টাঙ্গাইলে বর্ষার আগেই যমুনায় ভাঙ্গন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

সোনালী বাংলাদেশ নিউজ
সম্পাদনাঃ ১৭ মে ২০১৮ - ০৩:৫০:০৫ পিএম

চেতনা নিউজ ডেস্ক: প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা এলাকার প্রায় তিনশত থেকে চারশত বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু এবছর বর্ষার আগেই দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন।

এরমধ্যেই নিজেদের ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব অনেকেই এখন দিশেহারা। ইতিমধ্যে প্রায় ২৫/৩০ পরিবার এ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ভিটেমাটি হারিয়ে এখন নিঃস্ব। আর এ ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে বর্ষার আগেই ভূঞাপুর তারাকান্দি সড়ক ও শতবছরের কুঠি বয়রা বাজারের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যাবে না বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরব্রতী এলাকা গুলো এখন হুমকির মুখে। হঠাৎ করেই চার থেকে পাঁচ দিনের ব্যবধানে উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙ্গন। আর এ ভাঙ্গন ঠেকাতে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থাকলেও বাঁধের বাইরে অর্জুনা থেকে গোবিন্দাসী পর্যন্ত শুরু হয়েছে এ ভাঙ্গন। আর এ ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে ভূঞাপুর তারাকান্দি সড়কের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।

জানা যায়, যমুনা নদীর ভাঙন ঠেকাতে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনাসহ জামালপুরের পিংনা থেকে টাঙ্গাইলের যোকারচর পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছেন অনেক বছর ধরেই। কিন্তু এ নিয়ে কারো কোন উদ্যোগ না থাকায় এবছর বন্যার আগেই ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আর প্রতিবছরই বন্যা আসার আগে অর্জুনা গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কার কাজ করে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে বাঁধ সংস্কার কতটুকু হয় তা নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক। সম্প্রতি নদীর মাটি মিশ্রিত বালি ফেলে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত ওই অংশটুকুতে মেরামত করেতে দেখা গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের।

এলাকাবাসী বলেন, আমাগো যা কিছু আছিল সব নদীতে গেছে গা। এখন আর কিছু নাই। এ ভাঙ্গন যদি অব্যাহত থাকে তাহলে অর্জুনা গ্রামের অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এভাবে আর কিছু দিন চললে শত বছরের কুঠি বয়রা বাজার ও তারাকান্দি ভূঞাপুর সড়ক থাকবো না। আর এ বাজার ও রাস্তা না থাকলে ৪ থেকে ৫ উপজেলার মানুষ নিৎঃস্ব হয়ে যাবে। জিও ব্যাগে মাটি মিশ্রিত বালু দিয়ে নদীর পার দিয়ে দিচ্ছি তা আমাদের কোন কাজে আসবে না । এই জিও ব্যাগ দিয়ে যে বাঁধ দেয় যা খনিকের জন্য স্থায়ী বাঁধ না। এই এলাকায় যদি স্থায়ীবাঁধ হয়, তাহলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারতাম।

অর্জুনা এলাকার মো. বাবর আলী বলেন, কয়েক বছর ধরেই শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। কিন্তু এবছর বন্যা হওয়ার আগেই দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙ্গন। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নেই কোন মাথা ব্যর্থা সরকারি লোকজন আসে পরিদর্শন করে চলে যায়, কিন্তু কোন কাজ করে না। যে অংশে বাঁধ রয়েছে এখন তার বাইরের অংশে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে যে ভাঙ্গন দেখা গেছে তা অব্যাহত থাকলে শত বছরের আমাদের কুঠি বয়রা বাজার তা থাকবে না। সেই সাথে তারাকান্দি ও ভ’ঞাপুর সড়ক রয়েছে তাও ভেঙ্গে যাবে। আর এ রাস্তা ভেঙ্গে গেলে বন্যায় প্রায় তিন থেকে চারটি উপজেলায় পানিতে ডুবে যাবে।

ভাঙ্গনের স্বীকার আঙ্গুরি খাতুন, আনোয়ার, বাছেদ, নুরু বলেন, গত বছর বন্যার কারনে নদীর ওপার থেকে এপারে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর যমুনায় পানি আসার আগেই এ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আমাদের ভিটেবাড়ি যা কিছু ছিল সব শেষ। এখন আমরা কোথায় যাবো। আমাদের তো আর যাওয়ার জায়গা নাই। সরকার যদি আমাদের দিকে একটু নজর দিতো তাহলে আমরা এভাবে ভিটেমাটি ছাড়া থাকতাম না। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি অজুর্না থেকে গোবিন্দাসী পর্যন্ত একটি বন্যা রক্ষা বাঁধ। এ বাঁধ থাকলে আমরা হয়েতো ভিটেবাড়ি ছাড়া হতাম না।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. হযরত আলী মনি বলেন, যমুনা নদীর বেশকিছু অংশে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আমরা জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন রোধের চেষ্ঠা করছি। তবে আমাদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে কোন সমস্যা হয়নি। বাঁধের বাইরে অনেক জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে ভাঙ্গন এলাকাগুলোতে কাজ করছি। আশা করছি বর্ষার আগেই কাজ শেষ করতে পারবো। নতুন করে যে এলাকাগুলোতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে আমরা জানিয়েছি। তারা যেভাবে কাজ করতে বলবে আমরা তাই করবো।

সর্বশেষ
জনপ্রিয় খবর
%d bloggers like this: