শিরোনাম
মির্জাপুরে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন Headline Bullet       টাঙ্গাইল ডিএফএ এর সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান জামিলের স্মরণে শোকসভা  Headline Bullet       দেশে এবার নির্মাণ হবে দৃষ্টিনন্দন ২৬১ গম্বুজ মসজিদ Headline Bullet       মির্জাপুরে ফজলুর রহমান খান ফারুক ফুটবলে কালিয়াকৈর চ্যাম্পিয়ন Headline Bullet       অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত, প্রতিবাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন Headline Bullet       নাগরপুরে জনসভাকে ঘিরে প্রকাশ্যে এলো এমপি-উপজেলা আ’লীগের দ্বন্দ্ব Headline Bullet       মির্জাপুরে ডেঙ্গু সচেতনতায় র‌্যালি Headline Bullet       বিয়ের ২ দিন পর পুকুরে গোসল করতে গিয়ে লাশ হলেন যুবক Headline Bullet       নাগরপুরে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত Headline Bullet       মির্জাপুরে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও আইনশৃৃৃঙ্খলা সভা Headline Bullet      

আজ ভয়ঙ্কর সেই কাল রাত

সোনালী বাংলাদেশ নিউজ
সম্পাদনাঃ ২৫ মার্চ ২০১৮ - ০৪:৩২:৩৭ পিএম

চেতনা নিউজ ডেস্ক : ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যার ভয়াল স্মৃতির কাল রাত ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস আজ। নির্মম, নৃশংস ও ভয়াবহ এক হত্যাযজ্ঞের মর্মন্তুদ দিন।

সাতচলি­শ বছর আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ সাংকেতিক নামে নিরস্ত্র, ঘুমন্ত, মুক্তিকামী বাঙালির ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে তা ঘৃণ্যতম-অন্যতম গণহত্যার সাক্ষী হয়ে আছে। গত বছর থেকেই ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ ফোরামে এ জঘন্য গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে ক‚টনৈতিক তৎপরতা চলছে।

রোববার (২৫ মার্চ) রাত ৯টায় এক মিনিটের জন্য সারা দেশে সব বাতি নিভিয়ে গণহত্যার প্রতীকী প্রতিবাদ জানানো হবে। একই সঙ্গে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানায় তৎকালীন ইপিআর সদর দফতর এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে জানা-অজানা শহীদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।

একই সময় বাংলাদেশের মানুষ যে-যেখানে যে অবস্থায় থাকবে তারা নীরবতা পালন করবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। চলমান যানবাহন থেমে থাকবে। পথচারীরাও দাঁড়িয়ে থাকবে নীরবে।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এর মধ্য দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী বাঙালিদের প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় যাওয়ার আবহ সৃষ্টি হয়। এই বিজয়কে নস্যাৎ করতেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। তারা যে সহজে বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা দেবে না, তা বোঝা যাচ্ছিল নানা ঘটনা প্রবাহে। এরই ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মার্চের শুরুতেই পাকিস্তান সামরিক জান্তা জাতীয় পরিষদের আহ‚ত অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করে। প্রতিবাদে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। চলতে থাকে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রও। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার আড়ালে সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। তৎকালীন রমনা রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এদিকে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া সুকৌশলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বৈঠকে অপারেশন সার্চলাইট শুরুর নির্দেশ দেন। মধ্য রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকায় মেশিনগান, কামান, রিক্যয়েলস রাইফেল, মর্টার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, নীলক্ষেত, পুরান ঢাকার লালবাগ, জিঞ্জিরাসহ রাজধানীর প্রায় সর্বত্র ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। আর এর মধ্য দিয়ে মানবেতিহাসের পাতায় রচিত হয় কালিমালিপ্ত আরেকটি অধ্যায়। নিরস্ত্র, ঘুমন্ত মানুষকে বর্বোরচিত হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায় বিশ্ববিবেক। ২৫ মার্চ কালরাতে সারা দেশে যে হত্যাযজ্ঞ শুরু হয় তা অব্যাহত থাকে ’৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আÍসমর্পণ পর্যন্ত। নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামে শহীদ হন ৩০ লাখ বাঙালি।

গণহত্যার বলি হিসেবে পাকিস্তানি বাহিনী ছাত্র-শিক্ষকদের ওপরও হামলা চালায়। এ হামলার শিকার হন ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য. ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয় শিক্ষক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে থাকা গণমাধ্যমও সেদিন রেহাই পায়নি জল­াদ ইয়াহিয়ার পরিকল্পনা থেকে। পাকিস্তান হানাদাররা সেই রাতে অগ্নিসংযোগ, মর্টার সেল ছুড়ে একে একে দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, জাতীয় প্রেস ক্লাব ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত করে। এ হামলায় জীবন দিতে হয় বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীকেও।

২৫ মার্চ রাতে যখন ধ্বংসযজ্ঞ চলছিল ঠিক সেই সময় রাত সোয়া ১টার দিকে একদল সৈন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। তারা গুলি ছুড়তে ছুড়তে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে।

অবশ্য তার আগেই ২৫ মার্চের মধ্য রাতে (২৬ মার্চ) প্রথম প্রহরে তৎকালীন ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু।

সর্বশেষ
জনপ্রিয় খবর
%d bloggers like this: