মহাসড়কে যানবাহন থামিয়ে পুলিশের দুই সদস্যের চাঁদাবাজির চেষ্টার পরিণতি হলো মর্মান্তিক: দুটি নিরীহ প্রাণ অকালে ঝরে গেল; আহত হলেন একটি বাসের ৪০ জন যাত্রীর প্রায় সবাই। এ কেমন দেশ আমাদের?
গত রোববার রাতে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার পালাহার এলাকায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার বাসটির যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে, সেখানে নান্দাইল হাইওয়ে থানা-পুলিশের কয়েকজন সদস্য চলন্ত যানবাহন থামিয়ে চালকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছিলেন। একটি যাত্রীবাহী বাস তাঁদের পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁরা বাসটির চালকের চোখে টর্চের আলো তাক করলে চালক বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ফলে একজন বাইসাইকেল আরোহী বাসটির নিচে চাপা পড়ে মারা যান এবং বাসটি সড়কের পাশের পুকুরে পড়ে যায়। ফলে একটি শিশু মারা যায় এবং বাসের প্রায় সব যাত্রী বিভিন্ন মাত্রায় জখম হন।
এই থেকে এটা সুস্পষ্ট যে পুলিশের ওই সদস্যরা শুধু অপরাধপ্রবণই নন, তাঁদের সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানেরও অভাব আরও গুরুতর অভিযোগ হলো, ওই এলাকার গ্রামবাসী বলেন, নান্দাইল হাইওয়ে থানা-পুলিশের সদস্যরা মুশলি ও পালাহারের মাঝখানে নির্জন স্থানে প্রতি রাতেই যানবাহন থামিয়ে চাঁদাবাজি করেন এবং এই কাজে তাঁরা চালকদের চোখে টর্চের আলো ফেলার পদ্ধতিটি নিয়মিতভাবেই প্রয়োগ করেন। এর মানে, সেখানে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি শুধু নিয়মিত ব্যাপারই নয়, অতি মাত্রায় বিপজ্জনকও বটে। তাঁরা এই অপরাধ নিয়মিতভাবে করে চলেছেন যানবাহনের যাত্রীসাধারণের জীবনের পক্ষে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পন্থায়।
রোববারের দুর্ঘটনাটির পরপর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাইওয়ে পুলিশের দুই সদস্যকে ধরে পিটুনি দিয়েছেন, তাঁদের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন এবং মহাসড়ক অবরোধ করে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন।